বরেন্দ্র নিউজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সপরিবারে ভারত সফরের মধ্যেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে রাজধানী নয়াদিল্লি। এবার সহিংসতায় ১৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭০ জন। বিতর্কিত ইস্যুটি নিয়ে চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দিল্লিতে হামলা-হেনস্তার শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা।
গত মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হন। এমনকি বেধড়ক মারধরের শিকার হন আরও দুইজন। তাছাড়া সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) উত্তপ্ত এলাকার খবর সংগ্রহে গিয়ে হুমকির মুখে পড়ে কোনো রকমে রেহাই পান আরেক বাঙালি সংবাদকর্মী।
এ দিন রাজধানীর উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মৌজপুরে হামলাকারীদের গুলিতে জখম হন জে কে টুয়েন্টিফোর সেভেন নিউজ চ্যানেলের সংবাদকর্মী আকাশ। তাকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাছাড়া জ্বলন্ত মসজিদের ছবি তুলতে গেলে প্রচণ্ড মারধরের শিকার হন এনডিটিভির দুই সাংবাদিক অরবিন্দ গুণশেখর ও সৌরভ শুক্লা। এমনকি বিধ্বস্ত এলাকার ছবি তুলতে গিয়ে আক্রান্ত হন টাইমস অব ইন্ডিয়ার ফটো সাংবাদিক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে চিত্র সাংবাদিক অনিন্দ্য নিজের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতার বিবরণ দেন। তিনি বলেছেন, বিরোধপূর্ণ জাফরাবাদ অঞ্চলে খবর সংগ্রহে গিয়ে আমি ও আমার সহকর্মী ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলাম।
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, গত সোমবার দুপুরে আমরা মৌজপুর মেট্রোরেল স্টেশনে পৌঁছাতেই এক হিন্দু সংগঠনের সদস্য আমাদের কপালে তিলক এঁকে দিতে তৎপর হন। আপত্তি জানালে তিনি বলেন, ভাই আপনিও তো হিন্দু। তাহলে অসুবিধা কিসের?
এর প্রায় ১৫ মিনিট পর সেখানকার দুই গোষ্ঠীর মধ্যে পাথর ছোড়াছুড়ি শুরু হয় এবং ‘মোদী’ ‘মোদী’ স্লোগানের মধ্যে কালো ধোঁয়ায় আকাশ ছেয়ে যায়। শুনেছি স্থানীয় একটি মুসলিম বাড়িতে আগুন লেগেছে। সেদিকে এগোতে গেলেই একটি শিব মন্দিরের কাছে একদল লোক এসে আমাদের বাধা দেয়। অগ্নিকাণ্ডের ছবি তুলতে যাচ্ছি শুনে তারা আমাদের বলেন, ভাই আপনিও তো হিন্দু। তাহলে ওখানে যাচ্ছেন কেন? আজ গোটা হিন্দু সমাজ জেগে উঠেছে।
এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছবি তুলতে গেলে লাঠি ও লোহার রডধারী একদল লোক আমাদের ঘিরে ফেলে। তারা আমার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে সহযোগী সাংবাদিক সাক্ষী চাঁদ তাদের বাধা দেন। রুখে দাঁড়াতেই সেখান থেকে সশস্ত্র দলটি চম্পট দেয়।
আরও পড়ুন : দিল্লিতে নিহত ১৯, বিক্ষোভ দেখলেই গুলির নির্দেশ
তবে কিছুক্ষণ পরেই আমরা বুঝতে পারি যে, আমাদের পিছু নেওয়া হয়েছে। অনুসরণকারীদের মধ্যে এক তরুণ এগিয়ে এসে আমাকে সতর্ক করে বলে, তুই একটু বেশি চালাকি করছিস। তুই হিন্দু, না মুসলিম? তারা আমার প্যান্ট খুলে ধর্মীয় চিহ্ন খোঁজার চেষ্টা করলে হাতজোড় করে অনেক অনুনয় করি। তখন কিছু হুমকি দিয়ে তারা আমাদের ছেড়ে দেয়।
ওডি/কেএইচআর
Leave a Reply